মস্তিষ্ক ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জানুন
ভূমিকাঃ মস্তিষ্ক হল আপনার শরীরের কন্ট্রোলিং সিস্টেম এটি যতই পাওয়ারফুল ততই আবার মিস্টিরিয়াস এবং অবাক করা সাইন্টিস্টরা ডেইলি আপনার মস্তিষ্ক ব্যাপারে নতুন নতুন খোঁজ দিচ্ছে। আর ব্রেনের ব্যাপারে এমন কিছু কথা রয়েছে যেগুলো লোকেরা স্পেশালি সাইন্স ফিকশন মুভিতে এই মস্তিষ্কের ব্যাপারে ভুল ইনফরমেশন দিয়ে রেখেছে। আর আপনি সেই সাইন মুভিতে লোকের বলা কথাগুলিকে সত্য মেনে নিয়ে আপনার মস্তিষ্কের ব্যাপারে বেশ কিছু ভুল ইনফরমেশন রেখে দিয়েছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে মস্তিষ্ক সুস্থ রাখা যায়।
পোস্ট সূচীপত্রঃমস্তিষ্ক ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জানুন
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়
মস্তিষ্ক আমাদের দেহের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। আর এই মস্তিষ্ক হচ্ছে আমাদের মন আর পরিচয় ধারক মস্তিষ্কে রাখা থাকে আমাদের সমস্ত স্মৃতি। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন মানুষেরা বিভিন্ন রকমের চেষ্টা করে থাকেন। মায়েরা তাদের সন্তানদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য শিশুর খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন রকমের খাবার রেখে দেন। তবে আমাদের জেনে রাখা দরকার যে শুধু খাবারই নয় আরো অন্য উপায় আপনি বাড়াতে পারেন মস্তিষ্কের কার্যক্ষম্তা। নিম্নে কয়েকটি পয়েন্ট বর্ণনা করা হলোঃ
মস্তিষ্কের ব্যায়ামঃ
মস্তিষ্ক যত বেশি কাজে লাগাবেন আপনার মস্তিষ্ক তত বেশি আপনার কাজে ব্যবহার দিবে ভালো ব্যবহার দিবে। মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতা অসাধারণ যত বেশি মানুষ এই মস্তিষ্ক ব্যবহার করবে ততই এর ক্ষমতা বাড়তে থাকবে যেমন ধরেন প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকমের নতুন নতুন জিনিস নিয়ে ভাববেন, পুরাতন সকল কিছু স্মৃতি এগুলা মনে করার চেষ্টা করবেন এতে আপনার মস্তিষ্ক অনেক বেশি সক্রিয় থাকবে।
বিভিন্ন রকমের বই পড়াঃ
আপনি যত বেশি বই পড়বেন আপনার মস্তিষ্ক তত সক্রিয় থাকবে অনেক অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী থেকে জানা যায় যে তাদের প্রত্যেকের মধ্যে একটি কমন বিষয় ছিল তা হল তারা খুব বেশি পরিমাণে বই পড়তেন আর বই পড়া হচ্ছে আপনার মস্তিষ্কের সবচাইতে ভালো ব্যায়াম। বই পড়া বা কোন কিছু পড়া মস্তিষ্কের স্নায়ু সচল রাখতে সহায়তা করে শুধু তাই নয় খবরের কাগজ ম্যাগাজিন বই যাই হোক না কেন, অবসর সময়ে তার পরে নিলে মস্তিষ্কের বেশ ভালো একটা ব্যায়াম হয়ে যায়। এতে আপনার স্মৃতিশক্তি টাও উন্নত হয়।
নতুন নতুন কাজ করাঃ
যেকোনো ধরনের কাজের মধ্য দিয়ে নিজেকে বেঁধে ফেলবেন না প্রতিদিনকার কাজের পরিধি থেকে বের হয়ে নতুন কিছু কাজ করুন। নতুন কাজ মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে। এটি বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধির সাথে সাথে আপনার মস্তিষ্ককে আরো কর্ম করে তোলে। যেমন, আপনি হয়তো প্রত্যেকদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ডান হাত দিয়ে ব্রাশ করেন ডান হাত দিয়ে বেশি সময় মোবাইল ব্যবহার করেন কাল থেকে তা না করে আপনি যদি বাম হাত দিয়ে এগুলো ব্যবহার করেন এটাও নতুন বা ভিন্ন কাজের মধ্যে একটু অন্তর্ভুক্ত।
পরিমিত পরিমাণ ঘুম পারবেনঃ
আপনি যদি প্রত্যেকদিন পরিণত ঘুম পারেন তাহলে আপনার মস্তিষ্ক খুবই কার্যকরী হবে, কারণ মস্তিষ্ক আপনি যখন ঘুমান তখন সেটি বিশ্রাম পায়। আর আমরা সারাদিন যে সকল কাজ করি যেমন পড়াশোনা করি আরো অন্যান্য অফিসিয়াল যে সকল কাজগুলো করি সেগুলো করে যখন আমরা ঘুমাই তখন সেই তথ্যগুলো যে কাজগুলো করেছিলাম সেই তথ্যগুলো আমাদের মস্তিষ্কে স্থায়ীভাবে কনভার্ট হয়। এজন্য ঘুমকে বলা হয় মেমরি চার্জার ঘুমের সময় আপনার মস্তি ধরে রাখার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে রাখে।
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়
- প্রত্যেকদিন নিয়মিত ভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা।
- অতিরিক্ত টেনশন বা চিন্তা না করা।
- খাবারের সময় কোন ডিভাইস না ব্যবহার করে সঠিক নিয়মে খাওয়া দাওয়া করা।
- যতটা সম্ভব প্রয়োজন ছাড়া কথা না বলা।
- যে কোন বিষয়কে কঠিনভাবে না নিয়ে সহজ ভাবে নেওয়া।
- কোন রকমের প্রেসার না নিয়ে স্বাভাবিকভাবে চিন্তাভাবনা করা।
- এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম পাড়া।
মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবার
আমাদের বয়সের ভারে মস্তিষ্কের ক্ষয় হবেই এটা স্বাভাবিক এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে এমন কিছু বিষয় আছে যেগুলো আমরা মেনে আমাদের মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে পারি। তার মধ্যে একটি হলো সঠিক খাবার যাচাই করা। সম্প্রতি জানা গেছে নিউইয়র্কের লেন্স হিল হসপিটাল এর সনদ স্বীকৃত পুষ্টিবিদ জনাথন পার্টেল বলেন,"" নিয়মিত শরীরচর্চা করা নতুন কিছু প্রচেষ্টা করা, নতুন নতুন কোন কৌশল অনুশীলন করা, ঘুমকে অধিক বেশি প্রাধান্য দেওয়া, ইত্যাদি মস্তিষ্কের রোগ দূরে রাখবে এবং বৃদ্ধ বয়সেও আপনার মস্তিষ্ক থাকবে খুবই প্রখর। যে সকল খাবার খেলে আমাদের মস্তিষ্ক ঠিক থাকবে সুস্থ থাকবে সেগুলো হলোঃ
- পরিপূর্ণ খাবার খাওয়ার যেমন ফল সবজি কমেগা থ্রি ফ্যাটি, এসিড এন্টি অক্সিডেন, ভিটামিন অ ভিটামিন সি।
- সাইট্রাস জাতীয় সকল ফল খেতে হবে কারণ যারা প্রতিদিন সাইপ্রাস জাতীয় ফল খায় তাদের মস্তিষ্ক অধিক বেশি সফল থাকে এমনকি তাদের ব্রেন অধিক তীক্ষ্ণ হয়।
- আপনার মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার জন্য আপনি বাদাম খেতে পারেন। কারণ বাদাম খেলে মস্তিষ্ক অনেক বেশি সচল থাকে।
- আপনি ওটস জাতীয় খাবারও খেতে পারেন কারণ। ওটস জাতীয় খাবার শুধুমাত্র স্বাস্থ্যের জন্যই ভালো নয় বরং এটি মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।
- প্রত্যেকদিন খাবারের তালিকায় ডিম রাখা উচিত কারণ ডিম খেলে আমাদের মস্তিষ্ক ভালো থাকে স্নায়ুর শক্তি আর কার্যক্ষমতা ও বৃদ্ধি পায় ডিমে রয়েছে প্রোটিন যা মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী।
- আমাদের মস্তিষ্কের জন্য পালং শাক ও খুবই উপকারী। কারণে এতে রয়েছে ফুটে ইন বিটা ক্যারোটিন ও লুটেইন। যা আমাদের মস্তিষ্কের স্মৃতি শক্তি ঠিক রাখে ও মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সহায়তা করে।
- আপনার মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে আরো একটি খাবার খেতে পারেন ভিডিওতে আখেরোট খাওয়া আখরোট। এটি আপনার মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা অনেকটা বৃদ্ধি পাবে। কারি পাতার রসও খেতে পারেন।
মস্তিষ্ক রোগের লক্ষণ গুলি কি কি?
- আপনার খিদে কম লাগবে, গা গোলাবে এবং বমি বমি ভাব হবে।
- আপনি যে কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন না। অর্থাৎ মনোযোগের অভাব হবে।
- স্মৃতিশক্তি কমে যাবে অর্থাৎ আপনি সবকিছু সঠিকভাবে বলতে পারবেন না বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যাবেন।
- ঘার ব্যথা করবে বা শক্ত শক্ত ভাব হবে।
- শরীরের মধ্যে খিচুনি খিচুনি ভাব হবে।
- আপনার শ্রবণশক্তি কথা বলায় দেরি হয়ে যাবে বা আপনি ঝাপসা দেখতে পাবেন
- শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আপনি না চাইতেই অনিচ্ছাকৃতভাবে নাড়াচাড়া করবে।
বিশেষ পরামর্শঃ
সর্বোপরি কথা হল আপনার মস্তিষ্ক সুস্থ বা ঠান্ডা রাখতে সঠিক খাবার বা পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি এর পান করার বা খাবার কোন বিকল্প নেই। আপনাকে সঠিকভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই বিষয়গুলো যদি সঠিকভাবে মেনে চলতে পারেন তাহলে আশা করি আপনার মস্তিষ্ক সুস্থ থাকবে। আশা করি আমার কথাগুলা আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।
ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url