কাপড় ডিজাইন করার উপায়
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, অনেকেই জানিনা যে কাপড় ডিজাইন করতে কি কি ব্যবহার করা লাগে। এবং কাপড় ডিজাইন করার উপায় কি কি রয়েছে, কি করলে আমরা সুন্দর কাপড় ডিজাইন করতে পারব। চলুন নিম্নে জেনে আসি কাপড় ডিজাইন করার উপায় সমূহ।
কিভাবে কাপড়ের রং বেশি অ্যাট্রাক্টিভ করা যায়। এবং কাপড়ের রং সঠিক কোথায় কিনতে পাবেন এবং হ্যান্ড পেইন্ট এর দাম কেমন কি কোথায়। এবং এর সাথে সাথে ফেব্রিক রং এর দাম এখন কত, অর্থাৎ কাপড় ডিজাইন করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ পোস্টটি নিম্নে পড়তে থাকুন।
ভূমিকা
বর্তমানে এমন একটি সময় যেখানে কিনা অনলাইনে ব্যবসার সুবিধা রয়েছে। আর সেই ব্যবসার মধ্যে অন্যতম একটি ব্যবসা হল কাপড় ডিজাইন করা। অনেকেই বিভিন্ন রকমের বিভিন্ন রঙের বিভিন্ন রঙের কাপড় ডিজাইন করে থাকে। কেউ মেশিনে কেউ হ্যান্ড পেইন্টিং করে থাকে।
সুতরাং এখন হ্যান্ড পেইন্টিং এর কাজ খুব বেশি বাজারে চলে। আপনি আপনার জামা কাপড় শাড়ি পাঞ্জাবি, এই সকল কাপড় গুলো খুবই আকর্ষণীয় গড়ে তুলতে পারে হ্যান্ড পেইন্টিং এর মাধ্যমে। আবার এই হ্যান্ড পেইন্টিং এর কাজে খুব একটা টাকা লাগেও না। শুধু এই কাজটাই ধৈর্য ধরে কাজ করতে হয় এবং সময় দিতে হয়।
আরো পড়ুন ঃ বাজারের সেরা ফ্রিজ - ফ্রিজ দাম ২০২৩
তাহলে চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক আপনি কি উপায়ে হ্যান্ড পেইন্টিং এর মাধ্যমে কাপড় ডিজাইন করবেন এবং কাপড় ডিজাইন করতে কি কি আপনার লাগবে। অর্থাৎ কাপড় ডিজাইন করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো।
হ্যান্ড পেইন্ট করতে কি কি লাগে
হ্যান্ড পেইন্টিং এর কাজ শুরু করার জন্য আপনার অনেক কিছু উপকরণ সমূহ সব সময় লাগবে। আর এগুলো বাজার দ্রব্য মূল্য খুব কম। সুতরাং চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি ব্যবহার করে আপনারা হ্যান্ড পেইন করতে পারবেন।
- কাপড়ঃ সর্বপ্রথমে আপনাকে যেকোনো ধরনের ফেব্রিক কাপড় কিনতে হবে। যেমন সেটি হতে পারে সুতি কাপড় জর্জেট কাপড় কিংবা মোটা জর্জেট কাপড়। আবার অনেক সময় প্রায় সব ধরনের ফেবরিকেই কাজটা করা যায়।
- তুলি বা ব্রাশঃ আপনি বাজারে গেলে বিভিন্ন সাইজের ব্রাশ পাবেন। আর তুলি টা মোটা কিংবা সিগ না হবে সেটা আপনার সাইজের ওপর অর্থাৎ নকশার সাইজের উপর নির্ভর করবে। আর সবসময় চেষ্টা করবেন যে নকশার ক্ষেত্রে পাতলা তুলি ব্যবহার করার। কারণ সেটা অনেক ভালো হবে। আর যদি মনে করেন নকশা অনেক বেশি বড় করবেন তখন মোটা তুলি ব্যবহার করবেন।
- মিডিয়ামঃ আপনি যদি রং সঠিক ঘনত্বের পেতে চান তাহলে রঙের সাথে মিডিয়াম মেশাতে হবে। আর মনে রাখতে হবে হ্যান্ড পেইন্ট এর জন্য রংয়ের ঘনত্বটা খুবই একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
- রংঃ আপনি বিভিন্ন ধরনের রং দিয়ে এই কাজটা করতে পারবেন। তবে সব সময় পেইন্টিং এর জন্য ফেব্রিক রং ব্যবহার করাই উত্তম।
- কার্বন পেপারঃ আপনি যখন লাইব্রেরীতে যাবেন তখন কালো সাদা বিভিন্ন রং এর কার্বন পেপার পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে কালো কিংবা ডিপ কালারের কাপড়ের জন্য সাদা কার্বন পেপার ব্যবহার করবেন কারন সেটি অনেক বেশি আর্টটা ফুটে তুলে। তাই আপনি আপনার কাপড় ডিজাইন করার সুবিধার জন্য দুইটাই রাখতে পারেন।
- ফ্রেমঃ আপনি বাজারে গেলে পাঞ্জাবি শাড়ি জামা কাপড় কিনবা বিভিন্ন টি-শার্ট এর জন্য আপনি বিভিন্ন রকমের ফ্রেম পাবেন। সেখান থেকে আপনি নিজের সুবিধার জন্য যে কোন একটি ফ্রেম নিতে পারেন।
হ্যান্ড পেইন্ট করার নিয়ম
কাপড় ডিজাইন করার উপায়, এর মধ্যে আপনি হ্যান্ড পেইন্ট করার নিয়ম কিভাবে শিখবেন। এবং হেন পেইন্ট আপনি কিভাবে করবেন। চলুন এ সম্বন্ধে নিম্নে বিস্তারিত জেনে আসি।
- আপনি যে কাপড়টাতে হ্যান্ড পেইন্টিং করার ইচ্ছা করবেন সেটির প্রথমে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন অর্থাৎ ধুয়ে নিবেন। অনেক সময় সুতি কাপড় যেগুলো থাকে সেগুলোতে মাড় দেওয়া থাকে। তাই প্রথমে আপনাকে ভালোভাবে কাপড় টাকে মাড় মুক্ত করে তুলতে হবে। তবে মনে রাখবেন যদি সুতি ছাড়া অন্য ধরনের কাপড় হয় অর্থাৎ কাপড় হয় তাহলে সেটি শুধু আপনি ধুয়ে নিবেন।
- আপনারা যে ফ্রেম রয়েছে এই ফ্রেমটাতে ভালোভাবে কাপড়টাকে সেট করবেন। এরপরে কাগজের বোর্ড কিংবা কাথা দিয়ে নিতে হবে কাপড়ের নিচে শক্ত করে। তাতে করে কি হবে আপনার কাপড়ের ওপর পার্শ্বে রং লাগার সম্ভাবনা থাকবে না।
- তারপর নিজের মতো করে কাপড়ের রং যে কোন ডিজাইন করে নিবেন তুলি দিয়ে। তবে যদি আপনার পূর্ব দক্ষতা না থাকে তাহলে আপনি পেন্সিল দিয়েই নকশা করে নিবেন, করে তার ওপর রং দেবেন।
- যে কাপড়টাতে রং করবেন সেই কাপড়টাকে ভালো করে ফ্যানের বাতাসে কিংবা যে কোন রোদে শুকিয়ে নিবেন।
- এবার আপনি রং করার ১ দিন পর অর্থাৎ কাপড়ের রং যখন ভালোভাবে শুকিয়ে যাবে দেখবেন তখন যে পাশের রং করা হয়েছিল তা ঠিক বিপরীত পাশে ঠিকভাবে আয়রন করে নিবেন কাপড়টাকে। তাতে করে আপনার কাপড়ের ডিজাইন অনেকদিন টেকসই হবে।
- যে কাপড়টা আয়রন করবেন সেই কাপড়টা যদি মনে করেন যে এখনো আয়রন করা যাবে না তাহলে ওই কাপড়ের মাঝখানে একটি অন্য কাপড় রেখে সেটাকে ভালোভাবে আয়রন করবেন।
- তবে মনে রাখবেন হ্যান্ড পেইন্টিং করার এক মাসের মধ্যে কাপড় থাকে না দেওয়াই ভালো। তবে হ্যান্ড পেইন্টিং এর ১ সপ্তাহ পরে ধোয়া যায়।
আশা করি কাপড় ডিজাইন করার উপায় এর মধ্যে কাপড় কিভাবে হ্যান্ড পেইন্টিং করবেন এ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
কাপড়ের রং কোথায় পাওয়া যায়
কাপড়ের রং আপনি বিভিন্ন জায়গায় পাবেন কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের দাম পড়বে। এজন্য আপনি সঠিক দামে কিনতে হলে পুরাতন ঢাকার মধ্যে যেকোনো কোথাও খোঁজ করতে পারেন। কারণ পুরাতন ঢাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল সহ রংটং প্রায়ই দরে বিক্রয় করা হয়। আর তাছাড়া আপনি গুলিস্থান বাজারের মোড়ে আপনি এই কাপড় ডিজাইন করার রং পেতে পারেন।
সেখানে আরো বিভিন্ন ধরনের রং পাবেন। আর তাছাড়া যদি আপনি কখনো চকবাজার যান তাহলে চকবাজারের বিভিন্ন ধরনের দোকান গুলোতে কেমিক্যাল সহ কাপড় ডিজাইন করার বিভিন্ন ধরনের রং সুন্দর সুন্দর রং পেতে পারেন। সেখান থেকেও আপনি রং গুলো সংগ্রহ করতে পারেন পাইকারি দরে।
আরো পড়ুন ঃ ছেলেদের মুখের ত্বক মসৃণ করার ক্রিম
আরে ছাড়াও যদি আপনি ঢাকার বাইরে থাকেন তাহলে আপনি নিকটস্থ কোনো মার্কেটে গিয়ে এ রঙগুলো পেতে পারেন কিন্তু সেখান থেকে রংগুলো নিবেন না কারণ সেখানে কাপড় ডিজাইন করার রং গুলোর দাম অনেক বেশি নিয়ে থাকে। এজন্য আপনি বড় জায়গায় যাবেন অর্থাৎ বড় কোন হাটে যাবেন। সেখান থেকে কিনলে আপনি কম দামে পেয়ে যেতে পারেন।
হ্যান্ড পেইন্ট রং এর দাম
হ্যান্ড পেইন্ট রংয়ের দাম অর্থাৎ কাপড় ডিজাইন করার যে রং রয়েছে এই রঙের যায় বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম হতে পারে। তবে যদি আপনি পাইকারি কোন দোকান থেকে কিনেন তাহলে সেটি কম দামে পেয়ে যেতে পারেন। যেমন ধরেন আপনি যদি ৬০ মিলি রং কিন্তু চান তাহলে সেখানে ১৬০ টাকা লাগবে। আবার যদি আপনি এর চাইতে বড় বোতল নেন ১০০ মিলির বোতল নেন, তাহলে সেখানে আপনার থেকে কিছু ছাড় নিয়ে তারা ২৩০ টাকা রাখতে পারবে।
তবে চেষ্টা করবেন যেন আঞ্চলিক কোন দোকান থেকে না নেওয়ার কারণ এগুলো আঞ্চলিক দোকানের মিলে এগুলোর দাম অনেক বেশি ধরে তারা। আর আমার কাপড়ের রং কেমন লাগবে আর আমার কাপড়ের রং কেনা লাগবে স্বল্প তবে চেষ্টা করবেন। পরিচিত কোন দোকানে যাওয়ার যেখানে গেলে আপনার থেকে দাম কম নিবে দামের মধ্যে কেউ নাই তার মূল্য অনেক কম।
তবে চেষ্টা করবেন পরিচিত কোন দোকানে যাওয়ার কারন জীবনে গেলে আপনার থেকে কম নিতে পারে। তবে চেষ্টা করবেন বড় কোন বাজারে গিয়ে এই কাপড় ডিজাইন করার রংটা কেনার কেননা আপনি সেখানে গেলে পাইকারি দরে এই রংটা কিনতে পারবেন। তবে অনেক সময় এর দাম ওঠা নামা করে আপনি সঠিকটা জেনে বাজারে গিয়ে আপনি কাপড় ডিজাইন করার রংটা কিনবেন।
ফেব্রিক রং এর দাম কত
অনেকে জানতে চেয়েছেন ফেব্রিক রং অর্থাৎ কাপড় ডিজাইন করার জন্য ফেব্রিক দিয়ে রং রয়েছে এই রং এর দাম কেমন কত কোথায় বেশি এবং কোথায় কম হতে পারে। কারণ কাপড় ডিজাইন করার মধ্যে ফেব্রিক রং টাই অনেক বেশি ফুটে ওঠে। তবে মনে রাখবেন ফেব্রিক আবার কালার এর মধ্যে অনেকগুলো ১ নাম্বার ২ নাম্বার হয়ে থাকে আপনি আসল টা দেখে দেখে কিনবেন।
আরো পড়ুনঃ মাথার খুশকি ও চুলকানি দূর করার উপায়
আর দোকানে যখন যাবেন তখন এই রঙের নাম ফেব্রিক বলে উল্লেখ করবেন। তবে আপনার কাছে যদি এই রঙের টার দাম বেশি চেয়ে থাকে তাহলে আপনি কিভাবে বুঝবেন। আসলে এ রং টার বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন শহরে বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। সেখানে আপনার গ্রাম অঞ্চলে তো আরো বেশি নিবে।
সুতরাং শুরুতেই আপনাকে বাজারে যাওয়ার পূর্বে আপনাকে জেনে যেতে হবে। ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়, এখন সেটা আপনার লিটার নেওয়ার উপর নির্ভর করবে। আপনি যত লিটার নিবেন ততো লিটারের দামি তারা ধরবে বেশি নেবে না। তবে চেষ্টা করবেন পাইকারি বাজারে কিনার কাপড় ডিজাইন করার রং টা।
সর্বশেষ পরামর্শ
আমরা অনেক সময় নিজেদের শখের কারণে, এরকম ভাবে কাপড় ডিজাইন করা কিংবা আর্ট করার চিন্তাভাবনা করি। সুতরাং বিষয়টি আপনার জন্য ভালো কিন্তু, আপনাকে সঠিকভাবে এই ডিজাইনটা করতে হবে। কারণ এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ ঘরে বসে এখন মানুষ অনেক টাকা আয় করছে শুধু কাপড় ডিজাইনের মাধ্যমে।
শুধু আপনাকে কাপড় ডিজাইন করার উপায় এই জিনিসটা জানতে হবে। এবং অনেকেই আমাদের মধ্যে রয়েছেন যারা কিনা এখনো হ্যান্ড পেইন্টিং এর কাজ করেন। সুতরাং উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো যে কি কি উপায়ে আপনি আপনার কাপড় ডিজাইন করবেন অর্থাৎ কাপড় ডিজাইন করার উপায় কি কিরয়েছে।
এবং কোন রঙের দাম কোথায় গেলে বেশি পাবেন কোথায় গেলে কম পাবেন, এবং কোনটার দাম কত, এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে উপরে আলোচনা করা হয়েছে আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন। সুতরাং সম্পূর্ণ পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনাদের সামনে পোস্ট নিয়ে হাজির হব। আজকের মত এখানে শেষ করছি সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url