আমাদের বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে
প্রিয় পাঠক আজকে আপনারা জানবেন আমাদের বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে এ সম্পর্কে। অর্থাৎ আমাদের বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে এ নিয়ে একটি সংক্ষিপ্তে আর্টিকেল আপনাদের সামনে তুলে ধরা হবে। এই আর্টিকেল থেকে আপনারা পুরো বিষয়টি না জানলেও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট জানতে পারবেন।
সুতরাং আমাদের বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে এই নিয়ে আমার এই সংক্ষিপ্ত আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পয়েন্ট সম্পর্কে জানতে পারবেন যেগুলো আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। সুতরাং আমাদের বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে, এ নিয়ে আর্টিকেলটি বিস্তারিত করতে থাকুন আশা করি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন।
আমাদের বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে
১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয় যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা পেয়েছি । জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী দেশের মানুষের উপর নির্মমভাবে অত্যাচার চালায় ।
তারা বাংলার মানুষের সকল স্বাধীনতা হরণ করে এরকম একটি পর্যায়ে নিয়ে যায় যে বাঙালি কে তাদের দাসত্ব করা লাগে। এছাড়াও ১৯৭১ সালে ২৫ শে মার্চ বাঙালি জাতিকে শূন্য করার জন্য পাক হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট নামে একটি গণহত্যা শুরু করে। অপারেশন সার্চলাইটে বাংলাদেশের সব জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই জন্য ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতকে কাল রাত ও বলা হয়।
২৫ শে মার্চের এই হত্যাকাণ্ডের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে রুখে দাঁড়ানোর জন্য ২৬শে মার্চ রাতে প্রথম প্রহরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন ।তারপর অনেক মানুষের রক্তের বিনিময়ে তাদের প্রাণের বিনিময়ে ,শত মায়ের ছেলের জীবন নিয়ে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে একটি স্বাধীন দেশ।
এই পথটা খুব সহজ ছিল না ছিল অনেক কষ্টের বাংলার দামাল ছেলেরা এবং একজন যোগ্য নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় বাঙালি জাতি স্বাধীন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত পেয়েছে। বাংলার মানুষ তথা বাংলা পেয়েছে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের একটি স্বাধীন স্থান তৈরি হয়েছে। বাংলার মানুষ নিজের অধিকার ফিরে পেয়েছে, নিজেরা এখন স্বাধীন ভাবে পথ চলতে পারছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস রচনা
১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে ও পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে বাংলার মানুষের বাংলার মানুষের নিজেদের অধিকার ও চেতনা ফিরিয়ে আনা লড়াই ছিল মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের মূল। শত শত মানুষের রক্ত, অশ্রু ,অনেক আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। স্বাধীনতা অর্জনের পথে খুব দুর্গম ছিল।
অনেক লড়াই করে বাংলার মানুষেরা নিজের অধিকার ফিরে পেয়েছে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালিরা স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রপতি পেয়েছে বিশ্বের ইতিহাসে বাংলাদেশ ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করলেও তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠী ।
তখন তারা ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে আরো বেশি ষড়যন্ত্র শুরু করে। যার ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এ স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিকভাবে ডাক দেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন বাংলার মানুষ মুক্তি চাই , বাংলার মানুষ বাঁচতে চায় , বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়।
তার বক্তব্যে বলেন প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ করে তোলো যার যা আছে সে তাই নিয়ে যুদ্ধে নেমে পড়ো , আমরা বাংলার মাটিকে স্বাধীন করে ছাড়বোই ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও তার ঐতিহাসিক ভাষনে বাংলার মানুষ আরো বেশি উদ্বুদ্ধ হয় ।তিনি ভাষণে বলেন-
- এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
- এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম ।
এরপর তিনি ১৯৭১ সালে ২৬ শে মার্চ রাতের প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ডাক দেন এবং এরপর দীর্ঘ নয়মাস যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
মুক্তিযুদ্ধ কেন সংঘটিত হয়েছিল
পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক আচরণ, শোষণ নির্যাতন নিপীড়ন বর্বর অত্যাচারের জন্যই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। অধিকার বৈষম্যই মূলত মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার প্রধান কারণ ছিল । বাংলার মানুষেরা নিজেদের অধিকার না পেয়ে সবকিছু থেকে বঞ্চিত হওয়ার পর প্রতিবাদের করে তার প্রেক্ষিতেই মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের উপর যে অনৈতিক, অরাজকীয় ,অরাজনৈতিক আচরণ করেছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলার মানুষকে তারা খাদ্য থেকে বঞ্চিত করত। পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান ব্যবসার ক্ষেত্রে মাথাপিছু আয় দেখা যেত পূর্ব পাকিস্তানের সব সময় কম থাকতো এবং পশ্চিম পাকিস্তানি সব সময় বেশি থাকতো।
সবদিক থেকেই তারা শুধু পূর্ব পাকিস্তানকে অত্যাধিক বৈষম্যের মধ্যে রাখতো। সেই জন্য পূর্ব পাকিস্তান নিজের অধিকার ফিরিয়ে আনতে সকল অন্যায় অত্যাচার থেকে বাঁচতে নিজের স্বাধীনতা বজায় রাখতে পরিশেষে যুদ্ধে নামে এবং দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশ নিজেদের অধিকার ফিরে পাই এবং সকল বৈষম্য মিটিয়ে স্বাধীনভাবে পথ চলে। উপরোক্ত কারণগুলোর জন্যই ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
কেন মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে
পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যায়, অত্যাচার ,অবিচার সহ্য করতে না পেরে বাংলার মানুষ যখন প্রতিবাদ শুরু হয় করে তখনই শুরু হয় এই মহান মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে । পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আমাদের দেশটিকে তাদের নিজের দখলে নিতে চেয়েছিল। তারা ভেবেছিল বাংলার মানুষ দুর্বল।
তাই তারা বাংলার মানুষের উপর সহজেই অন্যায় অত্যাচার অবিচার করতে পারবে। কিন্তু পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যখন অত্যাধিক নির্যাতন শুরু করে বাংলার মানুষের উপর, তখন বাংলার মানুষ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে ।তারা পাক হানাদার বাহিনীর অন্যায় অত্যাচার অবিচার সহ্য করেনি। তারা নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করেছে ,তখনই শুরু হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ।
অনেক সময় পাক হানাদার বাহিনী রাতের অন্ধকারে নিরস্ত অসহায় বাঙালির ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে শুরু করে অত্যাচার শুরু করেন। তাই পরিশেষে বলা যায় যে বাংলার মানুষ যখন অর্থাৎ বাঙালিরা যখন পাক হানাদার বাহিনীর অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার সহ্য না করে তার প্রতিবাদ করে তখনই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ এবং দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালির মানুষ তাদের স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। সকল অন্যায় অত্যাচার জুলুম থেকে রক্ষা পেয়েছে ।মূলত এটাই মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হওয়ার প্রধান কারণ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা হয় এবং ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস এর মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন।
এছাড়াও ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণ দেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনি তার ভাষণে প্রথমে বাঙ্গালীদের পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার ডাক দেন এরপর ১৯৭১ সালে ২৬শে মার্চ তিন প্রত্যক্ষভাবে বাংলার মানুষকে আনুষ্ঠানিকতার সাথে স্বাধীনতার ডাক দেন। তিনি তার ভাষণে বলেন
- এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
- এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম।
এরপর বাংলার মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ হয়। তখন বাংলার মানুষ নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে চাই স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে চাই। তাই স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য অনেক আত্মত্যাগ অনেক মায়ের ছেলের বুকে রক্ত বুকের তাজা রক্ত শত শত মা-বোনদের প্রাণ দিয়ে ওরা আমরা পশ্চিম পাকিস্তানের শ্বসন নির্যাতন অন্যায় অত্যাচার অবিচার সবকিছু থেকে রক্ষা পেয়েছি আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেয়েছি স্বাধীনভাবে বাঁচার জায়গা।
আরো পড়ুনঃ ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার ১০ টি সহজ উপায়
এছাড়াও পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী বাংলা জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য ১৯৭১ সালের অনেক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এতে বাংলার মানুষ আরো বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে স্বাধীনতা ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। সুতরাং বলা যায় যে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালি জাতি অনেক আত্মত্যাগ করেছে। এই পথটা খুব সহজ ছিল না ।তবুও বাংলার মানুষ স্বাধীনতাকামী হওয়ায় বাংলা স্বাধীনতা ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে । এইজন্যই আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ , পেয়েছি নিজের স্বাধীনতা।
শেষ কথা:আমাদের বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে
প্রিয় পাঠক মন্ডলী আশা করছি আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা সংক্ষিপ্ত একটি ধারণা পেলেন আমাদের বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে এ নিয়ে। সুতরাং আমি মনে করি আমার আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে অর্থাৎ সংক্ষিপ্ত হলেও এখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য আপনারা পেয়েছেন। সুতরাং আমাদের আজকের এই পোস্টটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই সেটি কমেন্টে জানিয়ে দিবেন।
এবং রেগুলার সকল বিষয় সম্পর্কে আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন যেন নতুন তথ্য আপলোড করার সাথে সাথে আপনাদের ফোনে নোটিফিকেশন চলে যেতে পারে এবং আপনারা সঠিক তথ্যগুলো পেতে পারেন। সুতরাং আমাদের আজকের মতো এখানেই শেষ করছি সকলের ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, ধন্যবাদ।
ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url