ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম - ঈদের নামাজের নিয়ত
প্রিয় পাঠক মন্ডলী ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম প্রত্যেকটি মুসলমানের জানা প্রয়োজনীয় বা আবশ্যক। মুসলমানদের প্রত্যেক বছরে দুইটা করে আনন্দের দিন আসে অর্থাৎ যেটাকে বলা হয় ঈদের দিন। এবং সেই দুটি ঈদের নাম হচ্ছে ঈদুল আযহা এবং ঈদুল ফিতর। ঈদের নামাজের নিয়ত অর্থাৎ আলোচনা করব ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম সম্পর্কে।
সুতরাং ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম এবং ঈদের নামাজের নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে হলে আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণটা মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন আশা করি সঠিক তথ্য এবং বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ভূমিকা
ঈদুল আযহার এই দিনে মুসলিম উম্মাহ মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীনের নৈকট্য লাভের জন্য তার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোরবানির পশু কোরবানি করে এবং আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে। মুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উৎসব হচ্ছে ঈদের উৎসব। ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানেই খুশি। বছরে মুসলিমদের মধ্যে দুইটা করে এই আনন্দের দিন আসে।
আরো পড়ুন/জানুনঃ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানুন
তো এই ঈদগুলোতে আমরা সকলেই ঈদের নামাজের জন্য সকল বেলায় বের হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কিনা ঈদের নামাজের নিয়ত গুলো সঠিকভাবে জানেন না বা পড়তে পারেন না। এবং এর পাশাপাশি আরো দেখা যায় যে অনেকেই ঈদের নামাজের নিয়মটা সঠিকভাবে জানেন না।
তো সামনেই মূলত আমাদের ঈদুল আযহা চলে আসবে। অন্তত পেছনে যা কিছু করেছি করেছি এখন আমাদের সকলেরই জানা দরকার এই বিষয়গুলি কেননা এটি একটি ধর্মীয় বিষয় এবং নামাজের বিষয়। সুতরাং চলুন জেনে নেয়া যাক ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম কি এ সম্পর্কে।
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত
আমরা সকলেই জানি যে নিয়ত হচ্ছে মনে মধ্যে ইচ্ছা পোষণ করা কোন কিছু করার বা মনস্থির করাকেই নিয়ত বলে। তো ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত করা খুবই সহজ। নিয়ত করতে হবে মূলত মনে মনে এবং যেটা কিনা মুখে উচ্চারণ করা আবশ্যক নয় তবে করলে সমস্যা নেই। তো ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত টি হলোঃ
"নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাক'আতাইনি ওয়াজিবান ঈদুল আযহা ইমামান মুস্তাকবিলাল কিবলাতি।"
অর্থঃ আমি নিয়ত করতেছি যে, আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে ঈদুল আযহার দুই রাকাত ওয়াজিব সালাত, কিবলামুখী হয়ে আদায় করতেছি ইমামের পিছনে।"
তো এটাই হচ্ছে মূলত ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত আপনারা অবশ্যই ঈদুল আযহার নামাজে যাওয়ার পূর্বে এই নিয়তে মুখস্ত করে যাবেন এবং নামাজে দাঁড়ানোর পূর্বে এই নিয়োত টি করে নিবেন।
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম
প্রিয় পাঠক ঈদুল আযহার নামাজের নিয়তটা যেরকম ভাবে জরুরী, ঠিক সেরকম ভাবেই আমাদের প্রত্যেকের জানা দরকার ঈদুল আযহার নামাজের নিয়মটাও। কারণ আমরা অনেকেই ঈদুল আযহার নামাজের নিয়মটা সঠিকভাবে জানি না। তো ঈদুল আযহার নামাজের নিয়মটি চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক।
- নামাজের সময়ঃ সাধারণত ঈদুল আযহার সালাত আদায় করা হয়ে থাকে সূর্য ওঠার পর থেকে নিয়ে শুরু করে দুপুরের আগ পর্যন্ত। তবে সাধারণত এটি হয়ে থাকে ঈদগাহে বা মসজিদে ফজরের নামাজের পরেই।
- নামাজের রাকাত সংখ্যাঃ ঈদুল আযহার নামাজের রাকাত সংখ্যা হচ্ছে মূলত দুই রাকাত।
- নিয়তঃ নামাজের নিয়ত করার পর ইমামের সাথে তাকবীরে তাহরীমা (আল্লাহু আকবার) বলে সালাত শুরু করে দিবেন।
- তাকবীরঃ প্রথম রাকাতেই ইমাম তাকবীরে তাহরিমা আল্লাহু আকবার বলার পর অতিরিক্ত ভাবে তিনি তিনটি তাকবীর দিবেন। এবং প্রত্যেকটা তাকবীরেই আপনি আপনার হাত ছেড়ে দিবেন।
- কিরাতঃ এর পরেই ইমাম সুরা ফাতিহা তেলাওয়াত করবেন এবং আপনি এই সূরাটা মিলাবেন। তবে মুক্তাদী যারা আছেন পেছনে সবাই চুপ থাকবেন।
- রুকু সিজদা করাঃ ইমামের সাথে আপনারা রুকু এবং সেজদা করে নিবেন এবং করার পরে প্রথম রাকাত শেষ করে দ্বিতীয় রাকাতে দাঁড়িয়ে যাবেন।
- দ্বিতীয় রাকাতঃ দ্বিতীয় রাকাতে যখন ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা শেষ করবেন এবং আরেকটি সূরা পাঠ করবেন। এর পর এই রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত ভাবে ইমাম সাহেব তিনটা তাকবীর দিবেন। এবং যখন চতুর্থ তাকবীর তিনি দিবেন তখন ইমামের সাথে সাথে আপনাকে রুকুতে যেতে হবে।
- তাশাহুদঃ দ্বিতীয় রাকাতের শেষের দিকে তাশাহুদ দরুদ শরীফ শেষ করে দোয়া শেষ করে নামাজ শেষ করে দেওয়া হবে।
নামাজ শেষে ইমামের খুতবা শোনা
নামাজ আমরা যেরকমভাবে ওয়াজিব মনে করে আমরা সঠিকভাবে আদায় করলাম, ঠিক সেরকম ভাবেই ইমাম সাহেবের খুতবাটা সঠিকভাবে শ্রবণ করাও একটি বড় ধরনের সুন্নাহ বা ওয়াজিব। অর্থাৎ ইমাম সাহেব যখন খুতবা দিবেন তখন আপনার অবশ্যই খুবই নম্র এবং ভদ্র ভাবে চুপচাপ থেকে ইমাম সাহেবের খুতবাটি শুনবেন।
লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক মন্ডলী আশা করছি আপনারা ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম এর সঠিক পদ্ধতি গুলো জানতে পারলেন। অর্থাৎ জানতে পারলে কিভাবে ঈদের , নামাজের নিয়তটা করতে হয় এবং নামাজটা কিভাবে আদায় করতে হয় এ সম্পর্কে। আসলে এগুলো জানা আমাদের প্রত্যেকটা মুসলিমের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। কারণ আমরা মুসলিম এটা অবশ্যই আমাদের জানা দরকার।
আরো পড়ুন/জানুনঃ কুরআন শিক্ষা না করার পরিণতি - কুরআন শুদ্ধ করে পড়ার গুরুত্ব
তো সর্বোপরি কথা হলো, আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে যদি কিছু জেনে থাকেন এবং এখান থেকে জ্ঞান পেয়ে থাকে্, তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে দিবেন। যাতে করে আমার অন্যান্য মুসলিম ভাইয়েরাও জানতে পারে যারা কিনা সঠিক ঈদের নামাজের নিয়ত জানে না। তো আজকের মত এখানেই শেষ করছি সকলেই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url