ক্রেডিট কার্ড কি - ক্রেডিট কার্ড কি ভাবে পাবো

প্রিয় পাঠক মন্ডলী আজকে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আলোচনা করব আর সেটি হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড কি এ সম্পর্কে এবং ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পাবেন আপনিও এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে। এর পাশাপাশি আপনি আরো জানবেন কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড আপনার জন্য ভালো এবং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম কি এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কেও। তো চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক।
ক্রেডিট কার্ড কি - ক্রেডিট কার্ড কি ভাবে পাবো
ক্রেডিট কার্ড কি? ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পাবেন আপনি? এবং এটি পেতে আপনার কি কি যোগ্যতা লাগবে। এবং আপনি যদি এক সময়ে এটি বন্ধ করতে চান তাহলে সেটি কিভাবে করবেন? এ সমস্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে হলে নিম্নে পুরো পোস্টটি সম্পূর্ণটা মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।

ক্রেডিট কার্ড কি

বর্তমান সময়ে প্রায় মানুষই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন বা করতে চান। তো অনেকেই জানেন না যে ক্রেডিট কার্ড মূলত কি এবং এটি কিভাবে আপনি ব্যবহার করবেন এবং এটি কিভাবে কাজ করে। ক্রেডিট কার্ড মূলত একটি আর্থিক সরঞ্জাম যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দ্বারা জারি করা হয়। এই কার্ডটি ব্যবহার করে আপনি প্রয়োজনীয় পণ্য বা সেবা কিনতে পারেন। 
এবং পরে পরিশোধ করতে পারেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনি একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত অর্থ ধার নিতে পারেন, যা পরবর্তী মাসের বিলের সাথে পরিশোধ করতে হয়। তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক যে কোন যোগ্যতায় আপনি মূলত ক্রেডিট কার্ড পাবেন অর্থাৎ আপনি কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন হবে এবং এটি ব্যবহারের নিয়ম কি কি এ সম্পর্কে।

ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে বেশ কয়েকটি যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে হয়। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আপনার অর্থনৈতিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে এই শর্তগুলো নির্ধারণ করে। নিচে ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য কিছু সাধারণ যোগ্যতার শর্ত উল্লেখ করা হলোঃ
  • ১৮-২১ বছর: বাংলাদেশে সাধারণত ক্রেডিট কার্ডের জন্য ন্যূনতম বয়স হতে হয় ১৮ বছর। কিছু ব্যাংকে ২১ বছর বয়স ন্যূনতম শর্ত থাকতে পারে।
  • নিয়মিত আয়: ব্যাংক আপনার মাসিক আয়ের উপর ভিত্তি করে ক্রেডিট কার্ডের যোগ্যতা নির্ধারণ করে। সাধারণত ব্যাংক আপনার আয় নিশ্চিত করতে আপনার চাকরি বা ব্যবসায়ের প্রমাণপত্র চায়।
  • মাসিক আয়: বিভিন্ন ব্যাংকের বিভিন্ন শর্ত থাকতে পারে, তবে সাধারণত মাসিক নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় থাকতে হয় (যেমন ১৫,০০০-৩০,০০০ টাকা বা তার বেশি)।
  • উন্নত ক্রেডিট স্কোর: ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে আপনার ক্রেডিট স্কোর ভালো হতে হবে। যদি আপনি আগে কোনো ঋণ নিয়ে সঠিকভাবে পরিশোধ করে থাকেন, তাহলে আপনার ক্রেডিট স্কোর ভালো হবে।
  • ব্যাংক হিসাব: ব্যাংকের সাথে একটি সঞ্চয়ী বা চলতি হিসাব থাকা আবশ্যক। অনেক সময় আপনার ব্যাংক হিসাবের সাথে লেনদেনের ইতিহাসও বিবেচনা করা হয়।
  • চাকরি স্থিতিশীলতা: আপনি যদি স্থায়ী চাকরিতে থাকেন, তবে আপনার ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ব্যাংক সাধারণত চাকরির স্থায়িত্ব এবং কোম্পানির স্থিতিশীলতা বিবেচনা করে।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র: জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে দিতে হবে।
  • ঠিকানার প্রমাণ: ঠিকানা প্রমাণের জন্য ইলেক্ট্রিসিটি বিল, পানির বিল, বা টেলিফোন বিল জমা দিতে হতে পারে।
বিভিন্ন শর্তাবলীঃ ব্যাংক অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ডের জন্য কিছু অতিরিক্ত শর্ত থাকতে পারে, যেমন কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধরনের গ্রাহকদের জন্য প্রাথমিক আমানত রাখা প্রয়োজন হয়।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম

আপনি যদি একজন ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক হয়ে থাকেন অর্থাৎ আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন বা আপনি ভাবতেছেন যে আপনি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কিছু নিয়ম রয়েছে এগুলো আপনাকে জানতে হবে। তো ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম কি কি চলুন এবার নিম্নে এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

1. বিল সময়মতো পরিশোধ করাঃ প্রতিটি মাসের শেষে আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিল তৈরি হয়। বিলের সময়সীমার মধ্যে পুরো বা কমপক্ষে ন্যূনতম পরিমাণ পরিশোধ করুন। বিলের সময়মতো পরিশোধ না করলে সুদের বোঝা বেড়ে যাবে এবং আপনার ক্রেডিট স্কোর কমতে পারে।

2. ক্রেডিট সীমার মধ্যে থাকাঃ আপনার ক্রেডিট কার্ডে একটি নির্দিষ্ট সীমা থাকে। সেই সীমার মধ্যে থেকে খরচ করুন। সীমার বাইরে খরচ করলে অতিরিক্ত চার্জ প্রয়োগ হতে পারে এবং এটি আপনার ক্রেডিট স্কোরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

3. ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ সংরক্ষণ করাঃ ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ সংরক্ষণ করুন এবং অন্য কারো সাথে শেয়ার করবেন না। যদি কার্ড হারিয়ে যায় বা চুরি হয়, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকে জানাতে হবে।

4. প্রয়োজনীয়তার বাইরে খরচ না করাঃ ক্রেডিট কার্ডে খরচ করা সহজ বলে অতিরিক্ত খরচ করার প্রবণতা থাকতে পারে। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করুন এবং আপনার অর্থনৈতিক পরিকল্পনার মধ্যে থাকুন।

5. ক্রেডিট কার্ডের অফার এবং ফি সম্পর্কে জানাঃ বিভিন্ন ক্রেডিট কার্ডের জন্য বিভিন্ন ধরনের অফার, রিওয়ার্ড পয়েন্ট, এবং ফি থাকে। আপনার কার্ডের ফি এবং সুবিধাগুলি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।

6. EMI সুবিধা ব্যবহার করাঃ বড় পরিমাণ খরচ করলে একবারে পরিশোধ করা সম্ভব না হলে EMI (Equated Monthly Installments) সুবিধা ব্যবহার করতে পারেন, যা আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেয়।

7. ক্যাশ উইথড্রয়াল এড়ানোঃ ক্রেডিট কার্ড থেকে সরাসরি টাকা তোলার ক্ষেত্রে উচ্চ সুদ এবং অতিরিক্ত চার্জ প্রযোজ্য হয়। তাই সম্ভব হলে এই কাজটি এড়িয়ে চলুন।

8. ক্রেডিট স্কোর পর্যবেক্ষণ করাঃ নিয়মিতভাবে আপনার ক্রেডিট স্কোর চেক করুন। এটি আপনাকে আপনার আর্থিক অবস্থার উপর নজর রাখতে সাহায্য করবে।

এই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি ক্রেডিট কার্ড সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন এবং এর সুবিধা পেতে পারবেন।

ক্রেডিট কার্ড খরচ

ক্রেডিট কার্ড খরচ হলো আপনার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা বা সেবা গ্রহণের পরিমাণ। এটি নির্দিষ্ট সময়কালে আপনার কার্ড দিয়ে করা মোট ব্যয়ের সমষ্টি। ক্রেডিট কার্ড খরচের উপর ভিত্তি করে মাসিক বিল তৈরি হয়, যা আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়।

ক্রেডিট কার্ড খরচের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকঃ

  1. ক্রেডিট লিমিটঃ প্রতিটি ক্রেডিট কার্ডের একটি নির্দিষ্ট ক্রেডিট লিমিট থাকে, যা হলো সর্বোচ্চ পরিমাণ যা আপনি ধার নিতে পারেন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম করলে অতিরিক্ত ফি আরোপিত হতে পারে।
  2. সুদ হার (Interest Rate)ঃ যদি আপনি মাসের শেষে পুরো বিল পরিশোধ না করেন, তাহলে বকেয়া অর্থের উপর সুদ আরোপ করা হয়। সুদের হার কার্ডের ধরন ও শর্তাবলীর উপর নির্ভর করে।
  3. বিল পরিশোধঃ মাসের শেষে একটি বিল আসে, যা আপনার খরচের বিস্তারিত তথ্য প্রদান করে। পুরো বিল পরিশোধ না করলে বকেয়া পরিমাণের উপর সুদ আরোপ করা হয়।
  4. অতিরিক্ত ফিঃ  সময়মত বিল পরিশোধ না করলে বিলম্ব ফি (Late Fee) বা ওভারলিমিট ফি (Overlimit Fee) আরোপিত হতে পারে।
  5. পুরষ্কার ও ক্যাশব্যাকঃ কিছু ক্রেডিট কার্ড বিভিন্ন খরচের উপর পুরষ্কার পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক অফার করে, যা পরবর্তীতে ব্যবহার করা যায়।
ক্রেডিট কার্ড খরচের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ন্ত্রণ রাখা এবং সময়মত বিল পরিশোধ করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে সুদের খরচ না বাড়ে এবং ক্রেডিট স্কোর ভাল থাকে।

কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ভালো

বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সরবরাহ করে, এবং প্রতিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, সুবিধা ও চার্জ রয়েছে। কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড আপনার জন্য ভালো হবে তা নির্ভর করে আপনার প্রয়োজন, খরচের ধরন, এবং আপনি যে ধরনের সুবিধা খুঁজছেন তার উপর। নিচে কিছু ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বৈশিষ্ট্য ও সুবিধার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
ক্রেডিট কার্ড কি - ক্রেডিট কার্ড কি ভাবে পাবো

এবিএ ব্যাংক (AB Bank) ঃ

  • কার্ড টাইপঃ ক্লাসিক, গোল্ড, প্ল্যাটিনাম
  • বৈশিষ্ট্যঃ শূন্য শতাংশ EMI সুবিধা, ফ্লেক্সি পেমেন্ট প্ল্যান, ট্রাভেল পয়েন্ট
  • উপযুক্তঃ যারা ট্রাভেল ও EMI সুবিধা খুঁজছেন।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (Standard Chartered Bank) ঃ

  1. কার্ড টাইপঃ ক্লাসিক, গোল্ড, প্ল্যাটিনাম, সিগনেচার
  2. বৈশিষ্ট্যঃ উচ্চতর ক্রেডিট লিমিট, বিশেষ ক্যাশব্যাক অফার, শূন্য শতাংশ EMI সুবিধা
  3. উপযুক্তঃ যারা ক্রেডিট লিমিট ও ক্যাশব্যাক অফার খুঁজছেন।

ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (EBL) ঃ

  • কার্ড টাইপঃ ক্লাসিক, গোল্ড, প্ল্যাটিনাম, ট্রাভেল কার্ড
  • বৈশিষ্ট্যঃ শূন্য শতাংশ EMI সুবিধা, ফ্লেক্সি পেমেন্ট প্ল্যান, আন্তর্জাতিক ব্যবহার সুবিধা
  • উপযুক্তঃ যারা ট্রাভেল ও ইন্টারন্যাশনাল ট্রাঞ্জেকশন করতে চান।

ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (DBBL) ঃ

  • - কার্ড টাইপঃ ক্লাসিক, গোল্ড, প্ল্যাটিনাম
  • - বৈশিষ্ট্যঃ অ্যাট্রাকটিভ ক্যাশব্যাক অফার, EMI সুবিধা, লো ইন্টারেস্ট রেট
  • - উপযুক্তঃ যারা ক্যাশব্যাক ও লো ইন্টারেস্ট রেট খুঁজছেন।

প্রাইম ব্যাংক (Prime Bank) ঃ

  1. কার্ড টাইপঃ ক্লাসিক, গোল্ড, প্ল্যাটিনাম
  2. বৈশিষ্ট্যঃ শূন্য শতাংশ EMI সুবিধা, ফ্লেক্সি পেমেন্ট প্ল্যান, বিভিন্ন শপে ডিসকাউন্ট
  3. উপযুক্তঃ যারা বিভিন্ন শপে ডিসকাউন্ট ও EMI সুবিধা খুঁজছেন।

ব্র্যাক ব্যাংক (BRAC Bank) ঃ

  • কার্ড টাইপঃ ক্লাসিক, গোল্ড, প্ল্যাটিনাম
  • বৈশিষ্ট্যঃ সহজ অ্যাপ্লিকেশন প্রসেস, বোনাস পয়েন্ট, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ক্যাশব্যাক
  • উপযুক্তঃ যারা সহজ অ্যাপ্লিকেশন প্রসেস ও বোনাস পয়েন্ট খুঁজছেন।
আপনার জন্য সঠিক ব্যাংক এবং ক্রেডিট কার্ড বেছে নেওয়ার সময় নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করুন:
  1. সুদহার (Interest Rate)
  2. বার্ষিক ফি (Annual Fee)
  3. ক্যাশব্যাক ও ডিসকাউন্ট অফার
  4. EMI সুবিধা
  5. রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং অন্যান্য বেনিফিটস
এগুলো যাচাই করে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক ব্যাংক ও ক্রেডিট কার্ড নির্বাচন করা উচিত।

ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করার উপায়

ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করার জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হবে। এই ধাপগুলি অনুসরণ করে আপনি নিরাপদে এবং সঠিকভাবে আপনার ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করতে পারবেন। নিচে সেই ধাপগুলো দেওয়া হলো:

1. কার্ডের বকেয়া পরিশোধ করুনঃ ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করার আগে নিশ্চিত করুন যে কার্ডের সমস্ত বকেয়া অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। যদি কোনো পেন্ডিং ব্যালেন্স থাকে, তা বন্ধ না করে কার্ড বন্ধ করতে পারবেন না।

2. ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুনঃ ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করার জন্য ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিসে যোগাযোগ করুন। আপনি ফোন, ইমেল, বা ব্যাংকের শাখায় গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করার জন্য আপনাকে একটি ফর্ম পূরণ করতে হতে পারে।

3. লিখিত আবেদন জমা দিনঃ ব্যাংক থেকে যদি লিখিত আবেদন চাওয়া হয়, তাহলে আবেদনটি সঠিকভাবে লিখে ব্যাংকে জমা দিন। আবেদনপত্রে আপনার কার্ডের তথ্য, নাম, এবং কেন আপনি কার্ড বন্ধ করতে চান তা উল্লেখ করতে হবে।
4. বিকল করুন কার্ডটিঃ ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড বন্ধের নিশ্চিতকরণ পাওয়ার পরে, আপনার কার্ডটি বিকল (Deactivate) করতে পারেন। কার্ডটি কেটে ফেলুন বা বিকল করে ফেলুন যাতে কেউ সেটি ব্যবহার করতে না পারে।

5. বন্ধের নিশ্চিতকরণ নিনঃ কার্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ব্যাংকের কাছ থেকে একটি লিখিত বা ইমেইল কনফার্মেশন নিন যে আপনার কার্ডটি সফলভাবে বন্ধ হয়েছে। এই নিশ্চিতকরণটি আপনাকে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে।

6. ক্রেডিট রিপোর্ট চেক করুনঃ কার্ড বন্ধ হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে আপনার ক্রেডিট রিপোর্ট চেক করুন যাতে নিশ্চিত হতে পারেন যে কার্ডটি সত্যিই বন্ধ হয়েছে এবং সেখানে কোনো ভুল তথ্য নেই।

7. অটো-ডেবিট এবং অন্যান্য সাবস্ক্রিপশন বাতিল করুন: যদি আপনার ক্রেডিট কার্ডে কোনো অটো-ডেবিট বা সাবস্ক্রিপশন থাকে, তবে সেগুলো বাতিল করুন বা অন্য কোনো পেমেন্ট মেথডে পরিবর্তন করুন।

এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে আপনি নিরাপদে এবং সঠিকভাবে আপনার ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করতে পারবেন।

ট্রাস্ট ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

ট্রাস্ট ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। নিচে ট্রাস্ট ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের জন্য সাধারণ যোগ্যতার মানদণ্ড উল্লেখ করা হলো:

বয়স: আবেদনকারীর বয়স **২১ বছর থেকে ৬০ বছর** হতে হবে। যদি আপনি একজন চাকরিজীবী হন, তাহলে অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। ব্যবসায়ীরা ৬৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন।

আয়:
  • চাকরিজীবী: মাসিক ন্যূনতম বেতন **১৫,০০০ টাকা** হতে হবে।
  • ব্যবসায়ী: বছরে ন্যূনতম **২,৫০,০০০ টাকা** আয় থাকতে হবে।
নিয়মিত আয়ের উৎস: আবেদনকারীর একটি স্থিতিশীল এবং নিয়মিত আয়ের উৎস থাকতে হবে। সাধারণত, ব্যাংক আপনার সাম্প্রতিক বেতন স্লিপ বা আয়করের কাগজপত্র (Income Tax Return) যাচাই করতে পারে।

কর্মসংস্থানের অবস্থা:
  • আবেদনকারীকে ন্যূনতম **১ বছর** একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকতে হবে, এবং বর্তমানে কর্মরত থাকতে হবে।
  • যদি আপনি ব্যবসায়ী হন, তাহলে আপনার ব্যবসা ন্যূনতম **২ বছর** ধরে চালু থাকতে হবে।
ক্রেডিট স্কোর: ট্রাস্ট ব্যাংক আপনার ক্রেডিট রিপোর্ট ও ক্রেডিট স্কোর যাচাই করতে পারে। পূর্বের ক্রেডিট হিস্ট্রি ভালো থাকতে হবে। অর্থাৎ, কোনো ধরনের ডিফল্ট বা খেলাপি হিসাবে আপনাকে চিহ্নিত করা হলে ক্রেডিট কার্ডের আবেদন বাতিল হতে পারে।

নিরাপত্তা (Security): কিছু ক্ষেত্রে ট্রাস্ট ব্যাংক সিকিউরিটি হিসেবে Fixed Deposit (FD) বা অন্য কোনো ধরনের জামানত চেয়ে থাকতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনার ক্রেডিট স্কোর বা আয়ের উৎস কম থাকে।

কাগজপত্র (Documents):

  • ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট** (প্রমাণপত্র হিসেবে)
  • সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি**
  • বেতন স্লিপ** (চাকরিজীবীদের জন্য)
  • ব্যবসার কাগজপত্র** (ব্যবসায়ীদের জন্য)
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট** (সর্বশেষ ৬ মাসের)
  • ট্যাক্স রিটার্ন** (যদি প্রযোজ্য হয়)
এই যোগ্যতার মানদণ্ড ট্রাস্ট ব্যাংকের নীতির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে, তাই আবেদন করার আগে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা নিকটবর্তী শাখায় যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা উচিত।

ক্রেডিট কার্ড কি এবং ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে সর্বশেষ

প্রিয় পাঠক মন্ডলী আশা করছি আমাদের আজকের এই পুরো পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আমাদের আজকের এই পুরো পোস্টটি পড়ে আপনারা জানতে পারলেন ক্রেডিট কার্ড কি এবং ক্রেডিট কার্ড আপনি কিভাবে ব্যবহার করবেন এবং এটি কিভাবে পাবেন আপনি কি যোগ্যতা আপনার লাগবে এ সকল বিষয় সম্পর্কে। সুতরাং সব মিলিয়ে আজকের পুরো পোস্টটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্টে জানিয়ে দিবেন। এবং ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই ফেসবুক কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে দিবেন যেন অন্যরাও এটি করে উপকৃত হতে পারে। এবং টেকনিক্যাল, ইনফরমেটিভ সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url