শ্রী লংকা ভিসা বাংলাদেশ - শ্রীলংকার ভিসার দাম কত
প্রিয় পাঠক মন্ডলী , আজকে আমরা আলোচনা করব শ্রী লংকা ভিসা বাংলাদেশ সম্পর্কে। অর্থাৎ আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কায় যান তাহলে শ্রী লংকা ভিসা বাংলাদেশ থেকে আপনি কিভাবে পাবেন এবং কি কি পদ্ধতি রয়েছে চলুন এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
শ্রী লংকা ভিসা বাংলাদেশ কিভাবে পাবেন? কোন পদ্ধতিতে শ্রী লংকা ভিসা বাংলাদেশ এ আবেদন করতে হয় এবং শ্রীলংকা যেতে কত টাকা খরচ হয়? এ সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে হলে নিম্ন সম্পন্ন পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।
শ্রী লংকা ভিসা বাংলাদেশ
বাংলাদেশি নাগরিকদের শ্রীলংকা ভ্রমণের জন্য ভিসা প্রয়োজন। শ্রীলংকার ভিসা প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে সহজ এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনলাইনে ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথরাইজেশন (ETA) এর মাধ্যমে করা যায়। শ্রীলংকায় ভ্রমণের জন্য সাধারণত পর্যটক ভিসা, ব্যবসা ভিসা এবং ট্রানজিট ভিসা পাওয়া যায়।
- পর্যটক ভিসাঃ পর্যটক ভিসা শ্রীলংকায় ৩০ দিনের জন্য ভ্রমণের অনুমতি দেয়, যা অনলাইনে ETA এর মাধ্যমে সহজেই প্রাপ্ত করা যায়। ভিসা ফি সাধারণত ৩৫ ডলার হয়ে থাকে, তবে শ্রীলংকার সরকার বিভিন্ন সময়ে বিশেষ অফার দিয়ে ফি মওকুফ করতে পারে।
- ব্যবসা ভিসাঃ যদি আপনি ব্যবসায়িক কাজে শ্রীলংকা ভ্রমণ করতে চান, তাহলে ব্যবসা ভিসা প্রয়োজন হবে। এটির জন্যও ETA সিস্টেম ব্যবহার করা হয় এবং নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়।
- ট্রানজিট ভিসাঃ যদি শ্রীলংকা ভ্রমণের সময় অন্য কোন দেশে যাওয়ার পথে শ্রীলংকায় ট্রানজিট করতে হয়, তাহলে ট্রানজিট ভিসা প্রয়োজন। এটি সাধারণত ২ দিনের জন্য প্রদান করা হয় এবং বিনামূল্যে পাওয়া যায়।
- ETA আবেদন প্রক্রিয়া: শ্রীলংকার ETA ওয়েবসাইটে (www.eta.gov.lk) গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হয়। ২. পাসপোর্টের তথ্য এবং যাত্রার বিস্তারিত প্রদান করতে হয়। ৩. ভিসা ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হয়। ৪. আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ETA অনুমোদনের নোটিফিকেশন ইমেইলের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।
শর্তাবলীঃ
- পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে।
- ভিসার আবেদনকালে দেশে ফিরে আসার টিকেট থাকতে হবে।
- যথেষ্ট অর্থনৈতিক সামর্থ্যের প্রমাণ থাকতে হবে, যাতে আপনি ভ্রমণকালীন সমস্ত ব্যয় মেটাতে পারেন।
শ্রীলংকার ভিসা প্রক্রিয়া সাধারণত দ্রুত এবং সহজ, তাই বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য শ্রীলংকা একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।
শ্রী লংকা ভিসা ফি ফর বাংলাদেশী
বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য শ্রীলংকা ভিসা ফি মূলত ভিসার প্রকার ও মেয়াদের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত শ্রীলংকা ভ্রমণের জন্য দুটি প্রধান ভিসা প্রকার রয়েছে:
- ট্যুরিস্ট ভিসা (ETA):
- বাংলাদেশী পর্যটকদের জন্য শ্রীলংকায় প্রবেশ করতে ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথরাইজেশন (ETA) ভিসা প্রয়োজন হয়।
- ETA ভিসার মাধ্যমে ৩০ দিনের জন্য শ্রীলংকায় ভ্রমণ করা যায় এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে এটি বাড়ানো যেতে পারে।
- ETA ভিসার ফি সাধারণত $35 থেকে $50 এর মধ্যে হয়ে থাকে, তবে এটি পরিবর্তিত হতে পারে।
- বিজনেস ভিসা (ETA):
- ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণের জন্য ETA ভিসা নিতেও বাংলাদেশী নাগরিকদের একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।
- এই ভিসার ফি সাধারণত ট্যুরিস্ট ETA থেকে একটু বেশি হতে পারে, প্রায় $40 থেকে $60 এর মধ্যে।
- অনলাইন আবেদন করার মাধ্যমে ETA ভিসা সহজেই পাওয়া যায়, তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এয়ারপোর্টে এসে অন-অ্যারাইভাল ভিসা নিতেও পারবেন, যা কিছুটা ব্যয়বহুল হতে পারে।
শ্রীলঙ্কা যেতে কি ভিসা লাগে
বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের জন্য ভিসা প্রয়োজন। তবে শ্রীলঙ্কা সরকার বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য "ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন" (ETA) সুবিধা দিয়ে থাকে, যা অনলাইনে খুব সহজেই আবেদন করা যায়। এই ETA মূলত একটি স্বল্প-মেয়াদী ভিসা, যা পর্যটন, ব্যবসায়িক ভ্রমণ বা ট্রানজিট ভ্রমণের জন্য প্রদান করা হয়।
- ETA এর সুবিধাগুলি:
- পর্যটন ভিসা: ৩০ দিনের জন্য বৈধ থাকে এবং একাধিকবার শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের অনুমতি দেয়। ভিসার মেয়াদ শেষে শ্রীলঙ্কায় থাকাকালীন এটিকে আরও ৯০ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
- ব্যবসায়িক ভিসা: এটি ৩০ দিনের জন্য বৈধ এবং নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।
- ট্রানজিট ভিসা: ২ দিনের জন্য বৈধ, শুধুমাত্র ট্রানজিট যাত্রার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।
- ETA আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ধাপগুলো:
- অনলাইনে ETA পোর্টালে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
- ভিসা ফি প্রদান করতে হবে, যা নির্দিষ্ট ভিসার ধরণের ওপর নির্ভর করে।
- আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হলে ETA অনুমোদনের ইমেইল পাওয়া যাবে, যা প্রিন্ট করে শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের সময় দেখাতে হবে।
ETA অনুমোদিত হলে, শ্রীলঙ্কায় পৌঁছানোর সময় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাসপোর্ট ও ETA ডকুমেন্ট প্রদর্শন করতে হবে।
শ্রীলংকার ভিসার দাম কত
শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের জন্য ভিসার ফি নির্ভর করে ভিসার ধরণ এবং আবেদন করার পদ্ধতির ওপর। বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ৩০ দিনের ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন (ETA) ভিসা অনলাইনে আবেদন করলে ফি প্রায় ২০ মার্কিন ডলার বা ২,১৯২ টাকা। যদি শ্রীলঙ্কার বিমানবন্দরে পৌঁছে ভিসা নেওয়া হয়, তাহলে ফি প্রায় ২৫ মার্কিন ডলার বা ২,৭৪০ টাকা।
অনূর্ধ্ব ১২ বছরের শিশুদের জন্য ভিসা ফি প্রযোজ্য নয়। শ্রীলঙ্কার বর্তমান ভিসা নীতিমালা অনুযায়ী, ৩০ দিনের একক প্রবেশ ভিসার ফি ৫০ মার্কিন ডলার। তবে, বিশেষ কিছু দেশের নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে ভিসা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অনলাইনে আবেদন করার জন্য ETA ওয়েবসাইটে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়, এবং যাত্রার তারিখ থেকে পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে
শ্রীলঙ্কা কিভাবে যাওয়া যায়
শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন উপায় রয়েছে, এবং বাংলাদেশ থেকে যাত্রা করার জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। এখানে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার বিস্তারিত প্রক্রিয়া তুলে ধরা হলো:
1. ভিসা পদ্ধতিঃ শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের একটি বৈধ ভিসা প্রয়োজন। আপনি অনলাইনে সহজেই শ্রীলঙ্কার ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথরাইজেশন (ETA) ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে পারেন। এটি পর্যটন, ব্যবসা বা ট্রানজিট ভিসার জন্য প্রযোজ্য। ETA পেতে সাধারণত ২৪-৭২ ঘণ্টা সময় লাগে এবং অনলাইন আবেদন ফি জমা দিতে হয়।
2. ফ্লাইট বুকিংঃ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। ঢাকা থেকে শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনস, মালিন্দো এয়ার, এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সহ বিভিন্ন এয়ারলাইন সরাসরি বা সংযোগ ফ্লাইট পরিচালনা করে। সরাসরি ফ্লাইটের সময় প্রায় ৩.৫ থেকে ৪ ঘণ্টা। বিমানবন্দরের নাম হলো "বন্দারানায়েকে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট" (BIA), যা কলম্বোর প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
3. বিমানবন্দর থেকে শহরে যাতায়াতঃ কলম্বো বিমানবন্দর থেকে শহরে যাতায়াতের জন্য বিভিন্ন যানবাহন রয়েছে:
- ট্যাক্সি: সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় এবং বিমানবন্দর থেকে সহজে পাওয়া যায়।
- শাটল বাস: তুলনামূলকভাবে কম খরচে শহরে যাওয়ার উপায়।
- টুকটুক: বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় যাতায়াতের জন্য জনপ্রিয় বাহন।
4. ভ্রমণের সময়ঃ শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হলো ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত, যখন আবহাওয়া শুষ্ক এবং শীতল থাকে। মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমী বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা কিছু এলাকায় ভ্রমণের অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।
5. শ্রীলঙ্কার মধ্যে যাতায়াত
- বাস: শহরের মধ্যে এবং শহরের বাইরের যাতায়াতের জন্য একটি সাশ্রয়ী উপায়।
- ট্রেন: দেশের বিভিন্ন সুন্দর স্থান ভ্রমণের জন্য আরামদায়ক এবং সস্তা।
- ভাড়া গাড়ি/ট্যাক্সি: যদি স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করতে চান, তাহলে ভাড়া গাড়ি ভালো বিকল্প।
6. করণীয় ও দর্শনীয় স্থান: শ্রীলঙ্কায় বিভিন্ন সুন্দর স্থান রয়েছে, যেমন:
- ক্যান্ডি: ঐতিহাসিক শহর এবং বুদ্ধ মন্দির।
- নুওয়ারা এলিয়া: চা বাগান এবং পাহাড়ি এলাকা।
- গলে: প্রাচীন উপকূলীয় শহর।
- সিগিরিয়া: প্রাচীন পাথরের দুর্গ এবং বিশ্ব ঐতিহ্য।
ভিসা, ফ্লাইট বুকিং এবং আবহাওয়ার তথ্যের জন্য আগেই পরিকল্পনা করে নেওয়া ভালো।
বাংলাদেশ টু শ্রীলংকা বিমান ভাড়া কত
২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রীলংকা যাওয়ার জন্য বিমান ভাড়া বিভিন্ন এয়ারলাইন্স এবং ক্লাস অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। ঢাকা থেকে শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে ইকোনমি ক্লাসের টিকিটের সর্বনিম্ন মূল্য প্রায় ১৮,০০০ টাকা থেকে শুরু হয়। যেমন, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের ভাড়া এই রেঞ্জে পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিটের মূল্য প্রায় ৯৫,০০০ থেকে ১,০২,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। অন্যান্য এয়ারলাইন্স, যেমন থাই এয়ারওয়েজের টিকিটের দাম ৪৪,০০০ টাকার কাছাকাছি শুরু হয়। ফ্লাইটের ধরণ (ননস্টপ বা ওয়ানস্টপ) এবং বুকিংয়ের সময়ও ভাড়ার তারতম্য হতে পারে।
ননস্টপ ফ্লাইটে যাত্রা করলে ২-৩ ঘন্টার মতো সময় লাগে, আর ওয়ানস্টপ ফ্লাইটে প্রায় ৬ ঘন্টা সময় লাগে।আপনি যদি সর্বশেষ ভাড়া জানতে চান, তাহলে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইট থেকে বিস্তারিত চেক করা ভালো হবে।
শ্রী লংকা ভিসা বাংলাদেশ নিয়ে সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক মন্ডলী আশা করছি আমাদের আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা জানতে পারলেন শ্রী লংকা ভিসা বাংলাদেশ সম্পর্কে এবং কি পদ্ধতিতে আপনি শ্রীলঙ্কা যাবেন বাংলাদেশ থেকে? এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে। সুতরাং সব মিলিয়ে আজকের আমাদের এই পোস্টটি যদি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টে জানিয়ে দিবেন। এবং এ পোস্টটি আপনারা আপনাদের বন্ধুবান্ধবদের কাছে শেয়ার করে দিবেন যেন তারাও পোস্টটি পড়ে উপকৃত হতে পারে। সুতরাং আজকের মত এখানেই শেষ করছি ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।
ব্লগার জাফর সাহেবের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url